Big Bus Tours Dubai NYC Sightseeing Pass
Logo
logo

খরচ সামলাতে নানা কায়দা


Shehab   Munawar প্রকাশিত:  ১৬ মে, ২০২২, ০৮:৪০ পিএম

খরচ সামলাতে নানা কায়দা

ছোট ভ্যানগাড়ি, ছোট ব্যবসা, ছোট সংসার। নাম তাঁর জিল্লার। সবে বেঁধেছেন গাঁটছড়া। মা-বাবা, স্ত্রীকে নিয়ে জিল্লার হোসেনের এখনকার পৃথিবী। রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে প্রতিদিন ভ্যানের ওপরই সাজান শিশু পোশাকের পসরা। তবে ব্যবসায় ছোট এই বণিকের হাতে আসে না তেমন টাকাকড়ি। ক্ষুদ্র উপার্জনে কুলিয়ে উঠতে না পারায় পুরো সংসার রেখেছেন দূরে, গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। জিল্লার ঢাকায় একা, থাকেন ফকিরাপুলের মেসে।

হঠাৎ করেই যেন জিল্লারের জীবন হারিয়েছে গতি। নিত্যপণ্যের দামে লাগাম না থাকায় সংসার খরচ থাকছে না তাঁর নিয়ন্ত্রণে। কিছুদিন আগেও বাড়িতে মাসে সাত থেকে আট হাজার টাকা খরচ পাঠালেই চলত। এখন ১০ হাজার টাকার নিচে পাঠালে সংসার চালাতে পরিবারের ঘাম ছোটে। এদিকে, জিল্লারের ফকিরাপুলের মেসেও বাড়ছে খরচ। গেল বছর মেসে দিনে ১২০ টাকায় সকালে সবজি, রাতে মাছ বা মাংস দিয়ে খাওয়া যেত। এখন ১৬০ টাকা দিয়েও মাঝেমধ্যে রাতে মাছের বদলে ডিম, মাংসের বদলে মাছ খাওয়াচ্ছেন মেস ম্যানেজার।

তবে বাড়েনি তাঁর দোকানের বেচাকেনা, উল্টো কমেছে। এই বিক্রি থেকে যা লাভ হয়, তা দিয়ে নিজের থাকা-খাওয়া খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক ৩০০ টাকার মতো থাকে। সেই টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়ির সংসারসহ অন্য খরচ মেটাতে গলদঘর্ম জিল্লার। বাড়তি খরচের জাঁতাকলে পড়ে তিনি খোয়াচ্ছেন ব্যবসার পুঁজি। জিল্লার বলেন, এখন নিজের পুঁজি দিয়ে ব্যবসা করে সামলানো যাচ্ছে না। এ জন্য দোকানের মালপত্র বাকিতে নেওয়ার চেষ্টা করছি।

খাওয়া-থাকা, চিকিৎসা, পোশাক পরিচ্ছদ, শিক্ষা ও যাতায়াতের মতো মৌলিক বিষয়ে খরচ বেড়ে যাওয়ায় জিল্লার হোসেনের মতো সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবন-সংসারের অঙ্ক আর মিলছে না। জীবনযাপনের খরচায় যখন মানুষের নাভিশ্বাস, তখন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে নিজেদের সামলাচ্ছেন- তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে সমকাল। কথা বলেছে ছোট ব্যবসায়ী, দিনমজুর, রিকশাচালক, কারখানার শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, হকার, প্রাতিষ্ঠানিক খাতের নিম্ন আয়ের কর্মীদের সঙ্গে। খরচের চাপে চিড়েচ্যাপ্টা অধিকাংশ মানুষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো দিন দিন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ খাওয়া-দাওয়ায় টানছেন লাগাম। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম খরচ করছেন। কেউ করছেন বাড়তি আয়ের চেষ্টা, আবার কেউ বা খরচের চাপ সামলাতে নিরুপায় হয়ে ঋণের জালে জড়াচ্ছেন।

গেল এক বছরের ব্যবধানে দেশের বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি, মসলা, সাবান, সোডা, ওষুধ, শিক্ষা উপকরণ, জ্বালানি, কাপড়চোপড়, শিশুখাদ্যসহ নিত্যদিনের জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িত পণ্য ও সেবার দাম ৩ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যে দাম বাড়ার হার আরও বেশি। মোটাদাগে হিসাব কষে দেখা যায়, এক বছরের মধ্যেই ছয়জনের সাধারণ একটি পরিবারে মাসে খাওয়া খরচই বেড়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। একই সঙ্গে যাতায়াত খরচ, চিকিৎসা, শিক্ষা, পোশাক পরিচ্ছদ ও জ্বালানির পেছনে খরচও লাগামছাড়া। সব মিলিয়ে সাধারণ পরিবারগুলোতে অন্তত পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ বেড়েছে। তবে মানুষের আয় সেভাবে বাড়েনি, উল্টো কমেছে কারও কারও। বিশেষ করে করোনার দুঃসময়ে কাজ হারানো বা ব্যবসা হারানো মানুষ সংকটে পড়েছেন বেশ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সবার আয় আগের ছন্দে ফেরেনি।

চালের দাম নিয়ে মানুষ দুর্বিপাকে আছে বেশ আগে থেকেই। বোরোর ভরা মৌসুমেও ৪৫ টাকার নিচে প্রতি কেজি মোটা চাল মিলছে না। মাঝারি মানের চালের দাম ৫০ টাকার বেশি। আলু ছাড়া বাঙালির চলেই না, ভর্তা-ভাত কিংবা বিরিয়ানি সবখানেই লাগে আলু। এ বছর আলুও দেখিয়ে দিয়েছে তার দাম। সয়াবিন তেলের দাম তো রীতিমতো ইতিহাস। আমিষের বাজার মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ সবকিছুর দামই চড়ে আছে। বছরের ব্যবধানে 'গরিবের আমিষ' ডালের দামও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। শাকসবজি, মরিচ, মসলা কিনতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। দেশি ও আমদানি করা ফলফলাদির দামও চড়া।

এই প্রেক্ষাপটে বাজারে কেনাবেচাও আগের বছরের চেয়ে অনেকটাই কমে গেছে। ফলে মুদি দোকানি, মাছ, মাংস, সবজি ব্যবসায়ী, মসলার দোকানি, রেস্তোরাঁ, প্রসাধনসামগ্রী, পোশাক-পরিচ্ছদসহ বিভিন্ন খাতের ছোট ছোট বণিক পড়েছেন বিপদে। এতে সাধারণ ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই চাহিদা ছেঁটে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন।

বাসাবোর মুদি দোকানি হাসিবুর রহমান জানিয়েছেন, দোকানের নিয়মিত ক্রেতাদের অনেকেই কেনাকাটার ধরন পাল্টিয়েছেন। আগে যে ধরনের ও পরিমাণের পণ্য কিনতেন তাঁরা, এখন সাধারণ পণ্য কিনছেন। অনেকে বোতলজাত বা প্যাকেট পণ্যের বদলে খোলা পণ্য কিনছেন। পরিমাণেও নিচ্ছেন কম। ফলে পণ্যের দাম বাড়লেও বেচাকেনা কমে যাওয়ায় তাঁর আয়ে টান পড়েছে।

এই দোকানির কথার মিল পাওয়া গেল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবুল কাশেমের বয়ানে। স্ত্রী, দুই সন্তানসহ চারজনের পরিবারের এই কর্তা বললেন, দিন চলে যায় বলেই জীবন চলে যাচ্ছে। খাওয়া খরচ, বাসা ভাড়া, যাতায়াত খরচ, চিকিৎসা খরচের মতো মৌলিক সবক্ষেত্রে খরচ বেড়েছে। যাদের শিশুদের স্কুলে আনা-নেওয়া করতে হয়, তাদের খরচ আরও বেশি। শিশুরা যেসব খাবার পছন্দ করে, সেগুলোর দাম বেড়েছে আরও বেশি। এসব খরচ কোনোভাবেই এড়ানো যায় না। আয় বাড়েনি, তাই নানাভাবে খরচ কমাতে হচ্ছে।

বিভিন্ন মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে কাগজ সরবরাহ করেন ওয়াহিদ বিশ্বাস। করোনার সময় তাঁর ব্যবসা এক রকম বন্ধই ছিল। এর মধ্যে বড় মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। ছোট মেয়েও স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। মেয়েদের যাতায়াত, শিক্ষা উপকরণ, পোশাক পরিচ্ছদ, হাতখরচ বাবদ খরচ বেড়েছে। সম্প্রতি বেড়েছে বাসা ভাড়াও। ওয়াহিদ বিশ্বাস বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কাগজের দাম বেড়েছে। সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে দেশে বাজার ছোট হয়েছে। ফলে ব্যবসা টেকানো ও সংসার চালানো দুটোই এখন কঠিন।

রংমিস্ত্রি মজনু সিকদার বলেন, রমজানের আগে থেকেই কাজ কম। নতুন ভবনে কিছু কাজ থাকলেও পুরোনো বাড়ির মালিকরা রং করাচ্ছেন না। ফলে মাঝেমধ্যেই কোনো কাজ থাকে না। আয় ছাড়া দিন পার হয়। খরচ তো আর থেমে নেই। যেটা না করলে নয়, শুধু সেটাই করছি।

দৈনিক বাংলা মোড়ে ঘড়ি-চশমা বিক্রি করেন সৈকত। তাঁরও বেচাকেনা কমে গেছে। এ জন্য সৈকত স্যান্ডেল বিক্রি শুরু করেছেন। তিনি বলেন, চশমা-ঘড়ি মানুষ শখ করে কেনে। এখন খুব কম মানুষই এসব কিনছে। আর স্যান্ডেল লাগে সবার। এ জন্য কিছু টাকা ধার করে স্যান্ডেলের ব্যবসা শুরু করেছি।

আবদুস সোবহান গুলশানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাঝারি বেতনের চাকুরে। থাকেন মানিকনগরে। নিজের মোটরসাইকেলেই করেন অফিসে যাতায়াত। কয়েক মাস ধরে তিনি বাড়তি আয়ের জন্য অফিসে যাওয়া-আসার সময় মোটরসাইকেলে একজন যাত্রী নিয়ে নেন। সম্প্রতি একজন সহকর্মী তাঁর স্থায়ী যাত্রী হয়েছেন। অফিস শেষে বনশ্রীতে নামিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরেন। সোবহান বলেন, খরচ যেভাবে বেড়েছে, তাতে বাড়তি উপার্জন ছাড়া কিছু করার নেই। অন্য কিছু করার চেষ্টা করছি।

একইভাবে বাড়তি উপার্জনের জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেছেন চাকরিজীবী তমিজ আহমেদ। তমিজ বলেন, সংসার খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এ জন্য চেষ্টা করছি বাড়তি আয়ের।

মূল্যস্ফীতি: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত মার্চ শেষে সাধারণ মূল্যস্ম্ফীতির হার ছিল ৬.২২ শতাংশ। গত বছরের মার্চে সাধারণ মূল্যস্ম্ফীতি ছিল ৫.৪৭ শতাংশ। বিবিএসের হিসাবে, গত মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.৩৪ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫.৫১ শতাংশ। গ্রামীণ পর্যায়ে এই মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। গত মার্চে গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মূল্যস্ম্ফীতি ৬.৫২ শতাংশ আর খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.৭১ শতাংশ। বিবিএস বলছে, খাদ্য, পানীয়, পোশাক পরিচ্ছদ, জ্বালানি, আসবাব, চিকিৎসা ও অন্য স্বাস্থ্যসেবা, যাতায়াত, বিনোদনসহ সব ক্ষেত্রেই মানুষের খরচ আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। যদিও দেশের অর্থনীতিবিদরা বিবিএসের এ পরিসংখ্যানের সঙ্গে একমত নন। তাঁরা মনে করেন, প্রকৃত মূল্যস্ম্ফীতি আরও বেশি। মার্চের পরে এসে ভোজ্যতেল, আটাসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে এপ্রিল ও মে মাসে মূল্যস্ম্ফীতি আরও বাড়বে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

মজুরি: মানুষের জীবনযাত্রার খরচ যেভাবে বেড়েছে, এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আয় বাড়েনি। বিবিএসের মজুরি সূচকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে সারাদেশে গড় মজুরি সূচক বেড়েছে ৬.১৫ শতাংশ। কৃষি খাতে তা আরও কম, ৬.১৩ শতাংশ। শিল্প খাতে মজুরি বেড়েছে ৬.০৭ শতাংশ। তবে শিল্পের মধ্যে নির্মাণ খাতে মূল্যবৃদ্ধি সবচেয়ে কম। ব্যাপক শ্রমনির্ভর এ খাতে মাত্র ৪.৫৯ শতাংশ মজুরি বেড়েছে। তবে উৎপাদন খাতের মজুরি বেড়েছে ৮.৫৫ শতাংশ। আর সেবা খাতে মজুরি বেড়েছে ৬.৪১ শতাংশ।

সরকারের কী উদ্যোগ: বিভিন্ন উপায়ে সরকার বাজারে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভোজ্যতেল ও চিনির দাম যাতে কম থাকে, সে জন্য শুল্ক্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। বাড়িয়েছে চালের খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস)। পাশাপাশি টিসিবির মাধ্যমে ভোজ্যতেল, চিনি, ডালের মতো কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী দরে দেশের এক কোটি পরিবারের মধ্যে সরবরাহ করছে। বাজারে শক্তিশালী তদারকি না থাকায় সরকারের এসব উদ্যোগ মানুষের তেমন উপকারে আসছে না। সয়াবিন ও পাম অয়েলে সরকার শুল্ক কমালেও দাম বেড়েছে। এমনকি ব্যবসায়ীরা পণ্যটি মজুত করে বাজার থেকে উধাও করে ফেলেছে। এদিকে টিসিবির সরবরাহ করা পণ্য অনেক ক্ষেত্রে দরিদ্ররা পাচ্ছেন না; বরং এই সাশ্রয়ী দরের পণ্য প্রভাবশালীরা নিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার কৌশলে এই পণ্য নিয়ে ব্যবসাও করছেন।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন: আর্থিক খাতের বিশ্নেষকরা বলছেন, করোনা-পরবর্তী বাড়তি চাহিদা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে পণ্যদর বেড়েছে। তবে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এই পরিস্থিতির সুযোগও নিচ্ছেন। এ রকম অস্বাভাবিক সময়ে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। সরকার যেসব নীতি-সুবিধা দিচ্ছে, সেগুলো যাতে টার্গেট গ্রুপ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি অসাধু কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এ জন্য বাজার তদারকি জোরদার করার পরার্শ দিয়েছেন তাঁরা।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতা, অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা ঠেকানোর উদ্যোগ কম। বাজারের তদারকি শক্তিশালী করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। মজুত আইন ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। যারা সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ ব্যাহত করে বাজার অস্থিতিশীল করবে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।