আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন শ্রীলংকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

রোববার (১৭ জুলাই) দেশটির স্থানীয় সময় রাতে বিশেষ এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

আগামী বুধবার (২০ জুলাই) দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে এ জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।

শ্রীলংকার সংবিধানের ৪০ (১) (সি) অনুচ্ছেদের আওতায় রনিল বিক্রমাসিংহে এ জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সোমবার থেকে দেশজুড়ে এই জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জননিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলার সুরক্ষা এবং মানুষের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও সেবা বজায় রাখার স্বার্থে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো।

 

গত বছরের শেষ দিক থেকে শ্রীলংকায় অর্থনৈতিক সমস্যা তীব্র হতে শুরু করে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের চরম সংকটে পড়ে দেশটি। এমন অবস্থায় দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের মুখে গত ৯ মে মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী করেন তখনকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়ায় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে।

বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন গোতাবায়া। প্রথমে মালদ্বীপ এবং সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে চলে যান তিনি। স্পিকারের কাছে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন গোতাবায়া। গত শুক্রবার শ্রীলংকার পার্লামেন্টে সে পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।

 

গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে বিক্ষোভকারীরা রাজাপাকসে পরিবারের অনুগত মনে করেন। রাজাপাকসে পরিবারের চার ভাই বছরের পর বছর ধরে দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করছিলেন।

গোতাবায়ার পদত্যাগের পর বিক্ষোভ থেকে কিছুটা সরে এসেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা দখলে থাকা তিনটি প্রধান রাষ্ট্রীয় ভবন খালি করে দিয়েছেন। বিক্রমাসিংহে সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, তা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে আগামী বুধবার পার্লামেন্টে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে আগ্রহী প্রার্থীদের কাল মঙ্গলবারের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।